আবুল কাশম,ব্যুরো প্রধান চট্টগ্রাম/জে.কে.এস. উচ্চ বিদ্যালয় প্রাক্তন শিক্ষার্থী পরিষদের আয়োজনে আজ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এক আনন্দঘন পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয় ঈদ পুনর্মিলনী ও কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। দিনব্যাপী এই আয়োজনে বিদ্যালয়ের এসএসসি ২০০০ ব্যাচ থেকে শুরু করে ২০২৫ ব্যাচ পর্যন্ত পাচঁ শতাধিক প্রাক্তন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন, যা প্রাক্তনদের মধ্যে হৃদ্যতা, সংযোগ ও ঐক্যের বন্ধনকে আরও দৃঢ় করে তোলে। ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক মোহাম্মদ কায়সারের নেতৃত্বে পুরো টিমের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় অনুষ্ঠানটি সুসম্পন্ন হয়।অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অত্র এলাকার কৃতি সন্তান শিক্ষানুরাগী প্রাক্তন শিক্ষার্থী পরিষদের সভাপতি মুহাম্মদ জমির উদ্দিন। পুরো অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সংগঠনের অর্থ সম্পাদক এনামুল করিম এবং সহ-অর্থ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম। উক্ত অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ রিদওয়ানুল হক ও সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আব্দুল হান্নান। অত্র স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য জনাব ফজলুল করিম অনুষ্ঠানের উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ পরিচালক (প্রশাসন) শহিদুল হক চৌধুরী।বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি জসিম উদ্দিন ও অত্র বিদ্যালয়ের হেড মাওলানা জনাব মো: আবু সাদেক সিদ্দিকী ও অভিভাবক সদস্য মো: মিজানুর রহমান। আরো বক্তব্য রাখেন সিনিয়র সদস্য মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন, মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, মোঃ ইমরান হোসেন জিকু, মোঃ নুরুল আবছারসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের উপদেষ্টা পরিষদের সম্মানিত সদস্যবৃন্দ সাবেক সফল সভাপতি মো: নাঈম উদ্দিন, মোঃ রাসেল, জামাল উদ্দিন, মোঃ মহিউদ্দিন রিটন, মো: নাজেম, সৈয়দ আব্দুল্লাহ, তৌহিদসহ সিনিয়র সদস্যবৃন্দ, কার্যনির্বাহী সদস্যবৃন্দ, সকল প্রাক্তন, সংবর্ধেয় কৃতি শিক্ষার্থীবৃন্দ, অভিভাবক বৃন্দ ও অত্র এলাকার সচেতন ও শিক্ষা শিক্ষানুরাগী গণ্যমান্য সমাজের বিভিন্ন স্তরের ব্যক্তিবর্গ। এতে প্রবাসী উপদেষ্টা সদস্যবৃন্দ মোহাম্মদ ফুরকান, মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম ও নিজাম উদ্দিনসহ, মোহাম্মদ আমির হোসেন, মোহাম্মদ সালাউদ্দিন পারভেজ সকলের সার্বিক সহযোগিতা ও ভালো কাজে সকলের একাত্মতা ঘোষণা করেন।অনুষ্ঠানের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা, যেখানে সাম্প্রতিক বছরগুলোর মেধাবী ও কৃতিত্বপূর্ণ শিক্ষার্থীদের পুরষ্কার ও উপদেষ্টা পরিষদের সকল সদস্যবৃন্দের জন্য সম্মাননা স্মারক ও আমন্ত্রিত অতিথিদের গুণীজন সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ভালো ফলাফল অর্জন করে মানবিক মানুষ হিসেবে সুন্দর জাতি গঠনে অগ্রণী ভূমিকা পালনের জন্য অনুপ্রেরণা দেওয়া হয়।তবে অনুষ্ঠানে শুধুমাত্র আনন্দ নয়, ছিল সচেতনতা ও প্রতিবাদের স্পষ্ট বার্তাও। বক্তারা তাঁদের বক্তব্যে পরিষদকে প্রধান শিক্ষকের অসহযোগিতা, একঘেয়েমি পূর্ণ স্বার্থন্বেষী স্বৈরাচারী আচরণ ও বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রমে চলমান আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা বলেন, প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত কর্মকাণ্ডে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বারবার অসহযোগিতা করছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক ও ধিক্কারজনক। যারা এসব শিক্ষামূলক কার্যক্রমে বাধা প্রদান করে হীন উদ্দেশ্য সাধনের অপচেষ্টা চালাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ এবং একটি স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠার জোর দাবি জানান এবং সেই সাথে বিদ্যালয় প্রধানের এমন অসহযোগিতা ও বৃত্তি পরীক্ষা বন্ধের নেপথ্যে কে বা কাদের ইন্ধন কাজ করেছে তার সুষ্টু তদন্ত দাবি করেন।অনুষ্ঠান শেষে প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর অংশগ্রহণে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়, যা বিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে শুরু হয়ে পার্শ্ববর্তী এলাকা প্রদক্ষিণ করে। বিক্ষোভ মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা ব্যানার ও স্লোগান এবং সংহতির মাধ্যমে দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়।এই ঐতিহাসিক দিনটি ছিল শুধুমাত্র একটি মিলনমেলা নয়, বরং প্রাক্তনদের দায়িত্ববোধ, সচেতনতা এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে রক্ষার দৃঢ় সংকল্পের জোর দাবি জানান।