শরিফা বেগম শিউলী/সড়ক ও জনপথ (সওজ) রংপুর বিভাগের অধীনে চলমান কাজের গতি ও মান ফিরে এসেছে। গত বুধবার কাজের কিছুটা গাফলতি সেনাবাহিনী ধরার পর নড়েচড়ে বসেছে কাজের তদারকি কর্মকর্তারা।শনিবার বেলা ১১টায় রংপুর-সৈয়দপুর সড়কের হাজির হাট সিটির মোড় এলাকার দেখা যায় জোরেসোরে চলছে সড়কের নির্মাণ কাজ। সড়কের বিটুমিন দেওয়ার আগে মেশিন দিয়ে খুব ভালো করে পরিস্কার করে নেওয়া হচ্ছে সড়কের ধুলোবালু। এরপর বিটুমিন ছিটিয়ে সড়কে বিটুমিন ও পাথর মিশ্রণ করে স্টন ইস্পিটর মেশিনের মাধ্যমে সড়কে পাথর বিছানো হচ্ছে। সেখানে কাজের গুনগত মান পরীক্ষা করছেন এক ব্যক্তি। জানা গেলো তাঁর নাম মহসিন মজুমদার, তিনি রংপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগের ল্যাবরেটরি সহকারী গবেষণা কর্মকর্তা। পাশে কাজ তদারকি করছেন সড়ক ও জনপথ (সওজ) রংপুরের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ কালাম পাশা সহকারী গবেষণা কর্মকর্তা মহসিন মজুমদার বলেন, ‘গত বুধবার সেনাবাহিনীর একটি টহলদল সড়কে পর্যবেক্ষনে এসে তাদের হাতে কাজের অনিয়ম ধরা পড়ে। যাতে এ রকম অনিয়ম আর না হয় সে জন্য ঘটনাস্থলে দাড়িয়ে কাজের গুনগত মান পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছি।’রংপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ‘রংপুর-সৈয়দপুর সড়কের রংপুর হাসনা বাজার থেকে পাগলাপীর, সলেয়াসার বাজার থেকে বাড়াতির ব্রিজ, তারাগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে তারাগঞ্জ ব্রিজ, তারাগঞ্জ বাজার থেকে চিকলির বাজার পর্যন্ত মোট ১৭ কিলো ৬০০ মিটার সড়কের পাথর বিছানো এবং রংপুর মেডিকেল মোড় থেকে হাসনা বাজার পর্যন্ত সড়কের দু’ধারলর প্রস্ত বৃদ্ধির কাজে প্রাক্কলিত মূল্য ধরা হয় ২৯ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। ২৬ কোটি ৮৯ লাখ টাকায় কাজটি পান রাজশাহীর ঠিকাদার ডন এন্টারপ্রাইজ। কাজ শুরু হয় গত ২ ফেব্রুয়ারি, শেষ হওয়ার মেয়াদ রয়েছে আগামী ২ আগস্ট।বিধি অনুযায়ি সড়কে পাথর বিছানোর সময় প্রতি স্কয়ার মিটারে ১ দশমিক ২ কেজি বিটুমিন এবং ২৩ কেজি পাথর বিছাতে হবে। কিন্তু ঠিকাদার ২৩ কেজির পাথরের স্থলে ১৮ কেজি পাথর বিছান, এমন অনিয়ম গত বুধবার সেনাবাহিনীর একটি দল ধরে ফেলে। শনিবার সড়ক ও জনপথ (সওজ) রংপুরের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ কামাল পাশা বলেন, ‘আমরা কাজ সব সময়ে তদাকরি করে আসছি। শুরু থেকে ঠিকাদার কাজ ভালো করে আসলেও হঠাৎ কাজের কিছু অনিয়ম করে। সেটি সেনাবাহিনীর হাতে ধরা পড়ে। যাতে এ রকম আর না হয় সেদিকে আমরা শতর্ক রয়েছি। বর্তমানে পার স্কয়ার ফিটে ২৩ কেজি পাথরের স্থলে আরও বেশি পাথর ফেলানো হচ্ছে। ’তবে সরেজমিনে কাজের ঠিকাদার হারুন ওর রশিদকে পাওয়া যায়নি। কাজ তদারকি করছেন শাহিনুর রহমান নামে এক যুবক। তিনি বলেন, ‘ভাই, আমরা কাজ খারাপ করছি না। স্টন ইস্পিটর মেশিনের সাহায্যে সড়কে পাথর বিছাতে গিয়ে একটু কমবেশি পড়েছিল। যাতে আর কম না পড়ে সেদিকে খুব সতর্ক থাকছি।’সড়ক ও জনপথ (সওজ) রংপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন, ‘কাজে অনিয়ম করার কোনো সুযোগ নেই। সেনাবাহিনীর হাতে কিছুটা অনিয়ম ধরার পর আমরা আরও সতর্ক হয়েছি। সেখানে আমাদের লোকজন রেখে দিয়েছি। কাজের মান পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্যে একজন গবেষনা কর্মকর্তাকেও সেখানে রাখা হয়েছে। সার্বিক বিষয়ে কাজ চলছে খুব দ্রুত গতিতে। তবে কাজে কোনো প্রকার অনিয়ম ধরা পড়লে ছাড় নেই।