মোঃ জামশেদ মিয়া (স্টাফ রিপোর্টার)ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় ইমিগ্রেশন চেকপোষ্টের অনিয়ম-দূর্নীতির সংবাদ প্রকাশ করায় দৈনিক যুগান্তরের জেলা স্টাফ রিপোর্টার মোঃ ফজলে রাব্বি ও আরটিভির আখাউড়া প্রতিনিধি মোঃ সাদ্দাম হোসেনের বিরুদ্ধে মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করা হয়েছে। আখাউড়ার সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের আয়োজনে শুক্রবার(১৫ আগস্ট) সকাল ১০টায় শহরের পৌর মুক্তমঞ্চের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে আখাউড়া প্রেসক্লাব, টেলিভিশন জার্নালিষ্ট এসোসিয়েশন, রিপোটার্স ইউনিটটি, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম, সাংবাদিক কল্যাণ সোসাইটির সাংবাদিকেরা অংশ নেয়। এছাড়াও মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ, ঐক্যবদ্ধ আখাউড়া, ইনসানিয়াত বিপ্লবসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধন থেকে ৭২ ঘন্টার মধ্যে দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, ইমিগ্রেশন ওসি মোহাম্মদ আব্দুস সাত্তার ও আখাউড়া থানার ওসি মোঃ ছমিউদ্দিনের প্রত্যাহার এবং দৈনিক যুগান্তর ও আরটিভিতে প্রকাশিত ইমিগ্রেশন চেকপোষ্টের অনিয়ম-দূর্নীতির সংবাদের সুষ্ঠ তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার তিন দফা দাবী জানানো হয়।
আখাউড়া প্রেসক্লাবের সভাপতি শাহাদাত হোসেন লিটনের সভাপতিত্বে এসময় বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল মনসুর মিশন, পৌর জামায়াতের সহকারি সেক্রেটারি আব্দুর রহমান কাশগরি, সাবেক পৌর কাউন্সিলর মোঃ মন্তাজ মিয়া, দৈনিক যুগান্তরের জেলা প্রতিনিধি সোহরাব হোসেন, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের আখাউড়া শাখার সভাপতি আফজাল খান শিমুল, এনসিপির প্রতিনিধি আসিফ নেওয়াজ, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের প্রতিনিধি শওকত চৌধুরী, ব্রাহ্মনবাড়িয়া সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মোঃ জুয়েল মিয়া, দৈনিক দেশরুপান্তরের বিজয়নগর উপজেলা প্রতিনিধি এস. এম. জহিরুল ইসলাম টিপু প্রমুখ। মানববন্ধনে সঞ্চালনা করেন আখাউড়া প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি কাজী হান্নান খাদেম।
বক্তারা দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে পুলিশ কর্তৃক মামলার তীব্র নিন্দা প্রকাশ করেন। তারা বলেন, সাংবাদিকরা সমাজের দর্পন। তারা অন্যায়-অনিয়ম, সফলতা, সম্ভাবনা, জনদুর্ভোগ ইত্যাদি বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ করে। সাংবাদিকদের বস্তুনিষ্ঠ সংবাদে সমাজ ও দেশের কল্যাণ বয়ে আনে। আখাউড়া ইমিগ্রেশন চেকপোষ্টের অনিয়মের সংক্রান্ত সংবাদে ইমিগ্রেশন ওসির যদি কোন আপত্তি থাকে তাহলে তিনি সংশ্লিষ্ট পত্রিকায় প্রতিবাদ পাঠাতে পারতেন বা প্রেস কাউন্সিলে অভিযোগ দিতে পারতেন। তা না করে সাংবাদিকের নামে মামলা দেওয়া এবং তদন্ত ছাড়াই দ্রুত মামলা নথিভূক্ত (এফআইআর) করা অনভিপ্রেত উদ্দেশ্যমূলক। এটি সাংবাদিকদের কন্ঠরোধ করার অপপ্রয়াস।বক্তারা আরও বলেন, বিগত ফ্যাসিষ্ট সরকারের আমলে বিভিন্ন আইনের মাধ্যমে সাংবাদিকদের বাঁধা সৃষ্টি করে রাখা হয়েছিল। গণঅভ্যুত্থানের পরও যদি ফ্যাসিবাদি কায়দায় সাংবাদিকদের টুঁটি চেপে ধরার চেষ্টা অব্যাহত থাকে তাহলে প্রশাসনে ঘাপটি মেরে থাকা দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা পার পেয়ে যাবে। তখন তারা বিনা বাঁধায় দূর্নীতি অনিয়ম করবে। এতে সাধারণ মানুষ পদে পদে হয়রানি ও ভোগান্তির শিকার হবে। বক্তারা অবিলম্বে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবী জানান।উল্লেখ্য যে, ৭ আগষ্ট দৈনিক যুগান্তর ও আরটিভির অনলাইনে ইমিগ্রেশন চেকপোষ্ট ইনচার্জসহ কয়েকজন পুলিশের অনিয়ম-দূর্নীতি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করা হয়। এরপর আখাউড়া ইমিগ্রেশন চেকপোষ্টের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুস সাত্তার বাদী হয়ে গত ১২ আগষ্ট সাংবাদিক ফজলে রাব্বি ও সাদ্দাম হোসেনের বিরুদ্ধে আখাউড়া থানায় চাঁদাদাবী ও মানহানির অভিযোগ এনে মামলা করেন।