চয়ন চৌধুরী/সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নাম্বার ওয়ার্ডের সদস্য মো. নূরুজ্জামান গত ১ বছর ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন।এতে করে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে পাওয়া সকল নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন ওই ওয়ার্ডের প্রায় তিন হাজার বাসিন্দা।গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর থেকেই উপজেলা শ্রমিকলীগের নেতা ও ৫নাম্বার ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. নুরুজ্জামান পলাতক রয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।আর এ সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে এবং দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই ওয়ার্ডের নওধার গ্রামের বাসিন্দা মো. অনিক মিয়া (২৪) বাদি হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।ইউএনওর কাছে দেওয়া লিখিত অভিযোগ থেকে জানা গেছে, ইউপি সদস্য নূরুজ্জামান হলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের তিনবারের নির্বাচিত স্থানীয় প্রভাবশালী এমপি মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের আপন চাচাতো ভাই এবং তিনিও উপজেলা আওয়ামী শ্রমিকলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে রয়েছেন। ইউপি সদস্য নূরুজ্জামান এমপি মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের আপন চাচাতো ভাই হওয়ায় তিনিও এলাকায় ক্ষমতার প্রভাব খাটাতেন।
গত ৫আগস্ট আওয়ামী লীগের পতন হলে এমপি রতনের সাথে তিনিও এলাকা থেকে পালিয়ে গা ঢাকা দেন।
ভুক্তভোগী অনিক জানান, ইউপি সদস্যের অনুপস্থিতিতে তারই ছোট ভাই খায়রুলের স্বাক্ষরে অনেক সময় পরিষদের বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়াও দীর্ঘদিন ধরে জন্মনিবন্ধন, নাগরিক সনদপত্রসহ সাধারণ সেবা নিতে গ্রামবাসীকে একাধিকবার পরিষদে আসতে হচ্ছে, যা জনভোগান্তির সৃষ্টি করেছে। অনিক মিয়া নিজেও তার এক বছর বয়সী ছেলের জন্ম নিবন্ধন করাতে গিয়ে বেশ কয়েকবার ইউনিয়ন পরিষদে গেলেও ওই ইউপি সদস্যকে না পেয়ে তিনি এখনো পর্যন্ত তার ছেলের জন্ম নিবন্ধন করাতে পারেননি।স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, পরিষদে ইউপি সদস্যের দেখা না মেলায় সাধারণ মানুষজনদেরকে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। পাশাপাশি ওই ওয়ার্ডবাসীর মধ্যেও এ নিয়ে মারাত্মক ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে।এ বিষয়ে ইউপি সদস্য মো. নুরুজ্জামান বলেন, ৫ আগষ্টের পর থেকে নানাবিধ কারণে বেশিরভাগ সময়ই আমাকে এলাকার বাহিরে অবস্থান করতে হচ্ছে। যার ফলে নিয়মিত অফিস করতে পারছি না। তবে আমার ছোটভাই মো. খায়রুলের গাছতলা বাজারে থাকা দোকানে ওয়ার্ডবাসীর প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি জমা দিলে এতে আমি গিয়ে স্বাক্ষর করে আসি। তবে আমার ভাই আমার পরিবর্তে কাগজপত্রে কোন স্বাক্ষর করেনি। এব্যাপারে উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোজ্জাম্মেল হক ইকবাল হজ্ব করতে সৌদি আরব থাকায় তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জনি রায় বলেন, "লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তবে বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।