চয়ন চৌধুরী/সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার ধারাম হাওরে নৌকাডুবিতে সিখোঁজ হওয়ার ৩১ ঘন্টা পর শিশুসহ নিখোঁজ ২ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
রবিবার ৭ ঘন্টার ব্যবধানে একই হাওর থেকে নিখোঁজ ওই দুইজনের ভাসমান লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। এরমধ্যে রবিবার সকাল ১০টার দিকে ধারাম হাওরের মাগুরিয়া নামক স্থান থেকে প্রথমে নিখোঁজ ঘটক শামসুদ্দিনের(৬০) ভাসমান লাশটি উদ্ধার করা হয়। পরে একই দিন বিকেল ৫টার দিকে একই হাওর থেকে শিশু নুসরাত জাহানের(৭) ভাসমান লাশ উদ্ধার করা হয়।এর আগে শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার কান্দাপাড়া গ্রাম থেকে একটি ইঞ্জিন চালিত ছোট নৌকাযোগে একই উপজেলার মহেশপুর গ্রামে যাওয়ার পথে ধারাম হাওরের মাঝামাঝি স্থানে ঝড়ো বাতাসে ঢেউয়ের কবলে পড়ে এ নৌকা ডুবির ঘটনায় শিশুসহ ও দুইজন নিখোঁজ হয়।এ ঘটনায় নৌকার মাঝিসহ ৭জনের মধ্যে স্থানীয় জেলেদের সহযোগিতায় ৫ জনকে তাৎক্ষণিক জীবিত উদ্ধার করা হলেও বিয়ের ঘটক শামসুদ্দিন ও নুসরাত জাহান নামে ৭ বছর বয়সের এক কন্যাশিশু নিখোঁজ ছিল।উদ্ধারকৃত নিহত ঘটক শামসুদ্দিন উপজেলা সদর ইউনিয়নের কেশবপুর গ্রামের মৃত চান মিয়ার ছেলে। আর নিখোঁজ শিশু নুসরাত জাহান একই ইউনিয়নের পাশ্ববর্তী কান্দাপাড়া গ্রামের বাবুল মিয়ার মেয়ে।
পুলিশ, দমকল বাহিনী ও স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, কনে দেখাসহ বিয়ের আলোচনা করার জন্য শনিবার সকাল দশটার দিকে উপজেলার ধারাম হাওরের তীরবর্তী কান্দাপাড়া গ্রাম থেকে ছোট একটি ইঞ্জিন চালিত নৌকাযোগে একই উপজেলার জয়শ্রী ইউনিয়নের মহেশপুর গ্রামে যাওয়ার উদ্দেশ্যে নৌকার মাঝিসহ ৭জন রওনা দেন। পরে তাদের ওই নৌকাটি ধারাম হাওরের মাঝামাঝি যাওয়ার পর আকস্মিক ঝড়ো বাতাস ও ঢেউয়ের কবলে পড়ে নৌকাটি সেখানে ডুবে যায়। এসময় ওই হাওরে নৌকাযোগে মাছধরারত জেলেরা বিষয়টি টের পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে ডুবে যাওয়া নৌকার মাঝিসহ ৫জনকে হাওরের পানি থেকে জীবিত উদ্ধার করতে পারলেও বিয়ের ঘটক শামসুদ্দিন আহমেদ ও শিশু নুসরাত জাহান নিখোঁজ হয়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ, ধর্মপাশা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সদস্যরা ও ময়মনসিংহ থেকে আসা ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে দিনভর চেষ্টা করেও নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এ অবস্থায় রবিবার সকাল দশটার দিকে স্থানীয় জেলেরা নৌকাযোগে ধারাম হাওরের মাগুরিয়া নামকস্থানে মাছ ধরতে গিয়ে সেখানে ঘটক শামসুদ্দিনের ভাসমান মরদেহটি দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ও দমকল বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে সেখান থেকে ঘটক শামসুদ্দিনের মরদেহটি উদ্ধার করে নিয়ে আসে। এরপর একই দিন বিকেলে ৫টার দিকে প্রায় ৭ ঘন্টার ব্যবধানে একই হাওর থেকে নিখোঁজ শিশু নুসরাত জাহানের ভাসমান লাশটিও উদ্ধার করা হয়।
ধর্মপাশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, ধারাম হাওরের মাগুরিয়া নামক স্থান থেকে একই দিন প্রায় সাত ঘন্টার ব্যবধানে নিখোঁজ ঘটক শামসুদ্দিন আহমেদের ও শিশু নুসরাত জাহানের ভাসমান দুইটি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পাশাপাশি আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা শেষে মৃত ব্যক্তিদের স্বজনদের আবেদনের প্রেক্ষিতে বিনা ময়নাতদন্তে দুইজনের মৃতদেহই দাফনের জন্য স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।