চয়ন চৌধুরী(মোহনগঞ্জ থেকে)নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলার শ্যামপুর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ে যাওয়ার রাস্তার দু'পাশে থাকা অসংখ্য গাছ কেটে নেওয়ার প্রতিবাদে এক মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।সোমবার বেলা ১২টায় বিদ্যালয় সংলগ্ন ওই রাস্তায় 'তন্ময় চাষি' নামে স্থানীয় এক দলিল লেখকের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর ব্যানারে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।মানববন্ধনে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ছাড়াও এলাকার শত-শত লোক অংশ গ্রহণ করেন।মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৈয়দ আলী আহসান, সহকারি প্রধান শিক্ষক মো.শহীদ উল্লাহ খান, সহকারি শিক্ষক আমিনুল হক, লুৎফর রহমান, জয়নাল আবেদীন, শিক্ষার্থী অভিভাবক গোলাম কিবরিয়া, আব্দুর রব, নূরুল হক, রহমত আলী, শাজাহান মিয়া, মন্টু মিয়া, বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী অনামিকা আক্তার প্রমূখ।মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, উপজেলার প্রত্যন্ত হাওরাঞ্চলের গাগলাজুর ইউনিয়নের কামালপুর মৌজায় স্থানীয় এলাকাবাসীর দানকৃত প্রায় ৩ একর ২০ শতাংশ জায়গায় ১৯৬৯ সালে শ্যামপুর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। উক্ত বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠাকালীন সময় বিদ্যালয়ের দানকৃত পাশের জায়গা থেকে মাটি কাটে বিদ্যালয়ের ঘর নির্মাণের জন্য উঁচু ভিটে তৈরী করার ফলে সেখানে প্রায় ১ একর আয়তনের একটি ডোবার সৃষ্টি হয়। আর তখন থেকেই উক্ত ডোবা থেকে স্থানীয় কৃষকরা তাদের বোরো জমিতে সেচের পানি দিয়ে আসছিল। কিন্তু গত প্রায় ৩-৪ বছর যাবত বিদ্যালযের পার্শ্ববর্তী নতুন কামালপুর গ্রামের বাসিন্দা তারিকুজ্জামান চাষির ছেলে দলিল লেখক তন্ময় চাষি বিদ্যালয়ের ওই ডোবাটি তার দখলে নেওয়ার জন্য নানানভাবে চেষ্টা চালিয়ে আসছিল। এ নিয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সাথে আদালতে মামলাও চলমান রয়েছে। বিজ্ঞ আদালত উক্ত মামলা নিশ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বিরোধপূর্ণ ওই ডোবায় না যাওয়ার জন্য উভয় পক্ষকেই নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। বক্তারা আরো বলেন, দলিল লেখক তন্ময় চাষি আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে উক্ত ডোবাটি তিনি জোরপূর্বক দখলে নিয়ে সেখানে শত-শত বাঁশ পুতে গাছের ডাল ফেলে হাওরের মাছ আহরণের জন্য ঘের তৈরী করতে গিয়ে গত শুক্র ও শনিবার এই দুই দিন তিনি তার লোকজন নিয়ে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার একমাত্র সরকারি রাস্তাটির দুই পাশে থাকা সকল গাছ কেটে ডোবায় ফেলে দেন। বর্ষাকালে ওই গাছগুলোই হাওরের ঢেউয়ের আঘাত থেকে এ রাস্তাটিকে রক্ষা করে আসছিল। এমতাবস্থায় অবৈধ দখলদার ও গাছ খেকো দলিল লেখক তন্ময় চাষিকে দ্রুতই গ্রেপ্তার করে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান বক্তারা।এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত দলিল লেখক তন্ময় চাষির সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব না হলেও তার পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা তারিকুজ্জান চাষি এ বিষয়ে বলেন, বিদ্যালয়ের রাস্তার গাছ কে বা কাহারা কেটে নিয়েছে তা আমরা কিছুই জানিনা। তবে ডোবাটি আমার মালিকানাধিন এবং রেকর্ডিয় জায়গায় বিধায় সেখানে আমি বাঁশ ও গাছের ডাল কিনে মাছ আহরণের জন্য কাঠা (ঘের) দিয়েছি। এছাড়াও উক্ত ডোবাটি নিয়ে আদালতের কোনো নিষেধাজ্ঞাও তিনি পাননি বলে জানান।