পরেশ দেবনাথ(নিজস্ব প্রতিনিধি)যশোরের কেশবপুরে প্রতিবছরের মতো এবারও উৎসবমুখর পরিবেশে ৯৭ টি পূজা মণ্ডপে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে শারদীয় দুর্গোৎসব। প্রতিটি ইউনিয়নেই ছড়িয়ে পড়েছে উৎসবের আমেজ।রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর-২৫) মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এদিন কেশবপুরে উপজেলাজুড়ে দেবী দুর্গার বোধন, অধিবাস ও আমন্ত্রণের মধ্য দিয়ে পূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে।হিন্দু ধর্মমতে, মহালয়ার দিনে দেবী দুর্গার মর্ত্যে আগমন ঘটলেও ষষ্ঠীর মধ্য দিয়েই পূজার মূল আচার অনুষ্ঠান শুরু হয়। এদিন দেবীর বোধনকে ঘিরে ভক্তরা বিশ্বাস করেন, শুভ শক্তি ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার প্রতীক হিসেবে দেবী মর্ত্যে অবতীর্ণ হন। পূজা শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে উপজেলা প্রশাসন ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে।
ঢাক-ঢোল, শঙ্খধ্বনি ও উলুধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে মণ্ডপ এলাকা। নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর নির্বিশেষে সবাই নতুন পোশাকে দেবী বন্দনায় অংশ নিচ্ছেন। ভক্তরা জানান, পূজা শুধু ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি সামাজিক মিলনমেলাও। ষষ্ঠীর পর সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমীতে নানা আচার-অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে। আগামী বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর-২৫) বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে এবারের দুর্গোৎসব শেষ হবে। এরই মধ্যে আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে পুজা মণ্ডপগুলিতে।
ইতিমধ্যে যশোরের কেশবপুর উপজেলা ও পৌর বিএনপির উদ্যোগে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গাপূজা নির্বেঘ্নে উদযাপনে সহায়তা দিতে বিভিন্ন সংগঠন মতবিনিময় করেছে। উপজেলার নির্বাহী অফিসার রেখসোনা খাতুন ও উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি মোঃ শরিফ নেওয়াজ বিভিন্ন অঞ্চলে পূজা মন্দিরে গিয়ে তাদের প্রস্তুতি পরিদর্শন করেছেন। কেশবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন বলেন, এ বছর শারদীয় দূর্গা উৎসব খুব আনন্দঘন পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে দূর্গা উৎসব পালনের জন্য সরকার খুব আন্তরিক এবং আমাদেরও সকল প্রকার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে পুলিশের পাশাপাশি অতিরিক্ত আনসার ব্যাটেলিয়ান মোতায়ন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্ট কেশবপুর উপজেলা শাখার সদস্য সচিব উৎপল দে জানান, কেশবপুর পৌরসভায় মোট পূজার সংখ্যা ০৭টি, ০১ নং ত্রিমোহিনী ইউনিয়নে মোট পূজার সংখ্যা ০১টি, ০২ নং সাগরদাঁড়ী ইউনিয়নে মোট পূজার সংখ্যা ১৩টি, ০৩ নং মজিদপুর ইউনিয়নে মোট পূজার সংখ্যা ০৬টি, ০৪ নং বিদ্যানন্দকাটি ইউনিয়নে মোট পূজার সংখ্যা ০৫ টি, ০৫ নং মঙ্গলকোট ইউনিয়নে মোট পূজার সংখ্যা ০৫ টি, ০৬ নং কেশবপুর ইউনিয়নে মোট পূজার সংখ্যা ০৭টি, ০৭ নং পাঁজিয়া ইউনিয়নে মোট পূজার সংখ্যা ০৮ টি, ০৮ নং সুফলাকাটি ইউনিয়নে মোট পূজার সংখ্যা ১২ টি, ০৯ নং গৌরিঘোনা ইউনিয়নে মোট পূজার সংখ্যা ১৩ টি, ১০ নং সাতবাড়িয়া ইউনিয়নে মোট পূজার সংখ্যা ১২ টি, ১১ নং হাসানপুর ইউনিয়নে মোট পূজার সংখ্যা ০৮ টি। এবছর মোট ৯৭টি পূজা মন্ডপে দূর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে।তিনি আরও বলেন, রোববার ২৮ সেপ্টেম্বর মহাষষ্ঠী, সোমবার ২৯ সেপ্টেম্বর মহাসপ্তমী, মঙ্গলবার ৩০ সেপ্টেম্বর মহাঅষ্টমী, বুধবার ১ অক্টোবর মহানবমী এবং বৃহস্পতিবার ২ অক্টোবর বিজয়া দশমীর মধ্য দিয়ে পূজার আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে। প্রতিটি মণ্ডপে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকরাও দায়িত্ব পালন করছেন।