মোঃ মিজানুর রহমান মিলন/মাদকের ভয়াবহ বিস্তারে নাজেহাল গাইবান্ধার সাধারণ মানুষ। এলাকায় গড়ে উঠেছে সুসংগঠিত মাদক চক্র। মাদকসেবী ও বিক্রেতারা সংঘবদ্ধ হয়ে ছিনতাই, চাঁদাবাজি, জমি দখল, হত্যা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছে। কিশোর গ্যাংয়ের হাতে সমাজ আজ জিম্মি। এসব গ্যাং মাদকাসক্ত হয়ে আরও ভয়ংকর হয়ে উঠেছে, যার ফলে এলাকায় বাড়ছে চুরি, ডাকাতি ও নৈরাজ্য।সরেজমিনে অনুসন্ধানে গণমাধ্যমকর্মী জানতে পারেন, গাইবান্ধা সদর উপজেলার বল্লমঝাড় ইউনিয়নের দক্ষিণ খোলাবাড়ী মাষ্টারপাড়া গ্রামের প্রভাবশালী মোঃ মজিবর রহমান এর তৃতীয় পুত্র মোঃ জুয়েল রানা একাধারে মাদকসেবী, মাদক বিক্রেতা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত। অভিযোগ রয়েছে, তিনি তার দুই ভাই—আনসারের সিকিউরিটি সদস্য জিল্লু ও জিয়াউরের সহায়তায় রাজধানী ঢাকার গুলিস্তান, মতিঝিল, লালন মোড় ও যাত্রাবাড়ী , গাইবান্ধা সহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় গাঁজা ও ইয়াবার পাইকারি সরবরাহ দিয়ে আসছেন।এছাড়াও, গাইবান্ধা জেলায় গড়ে উঠেছে একটি সুসংগঠিত মাদকচক্র, যারা মাদক ব্যবসার পাশাপাশি মানুষ হত্যা, ভূমিদস্যুতা, চাঁদাবাজি, অবৈধ বালু উত্তোলন ও সন্ত্রাসে লিপ্ত রয়েছে। রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে এরা এলাকায় সন্ত্রাসী দখলদারিত্ব ও মানহানিকর কার্যক্রম চালাচ্ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, জুয়েল রানার নেতৃত্বে এই চক্রটি এলাকাবাসী, শিক্ষক, ব্যবসায়ী ও সাংবাদিকদের চরম নিরাপত্তাহীনতায় ফেলেছে।আরো জানা যায়, আনসারের সিকিউরিটি সদস্য দুই ভাইয়ের ছত্রছায়ায় জুয়েল রানা একাধিকবার হত্যার হুমকি, জমি দখল, বাড়িঘর পোড়ানো ও মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। তার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়েছে। উক্ত এলাকার আশপাশে নিয়মিত বসছে মাদকের জমজমাট হাট। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলেও তারা মাদকের পাইকারি সরবরাহ করে।মাদক নির্মূলে দায়িত্বপ্রাপ্ত মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শাহনাজ শাহ এবং গাইবান্ধা সদর থানার অফিসার ইনচার্জের কাছে এসব বিষয়ে সাংবাদিকরা তথ্য প্রেরণ করেছেন। একাধিকবার অভিযান চললেও অভিযুক্তরা থেকে যাচ্ছে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। সাজা না পাওয়ার সুযোগে তারা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।এ বিষয়ে ভুক্তভোগী সাংবাদিক মো. মিজানুর রহমান মিলন গাইবান্ধা সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। তিনি প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তা ও বিচার চেয়েছেন।এদিকে, আনসারের সিকিউরিটি সদস্যদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে আনসার ও ভিডিপি মহাপরিচালক জানান, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।সচেতন মহলের দাবি, সন্ত্রাস ও মাদক নির্মূলে প্রশাসনের আরও কঠোর ভূমিকা প্রয়োজন। তারা বলেন, “সন্ত্রাসীদের কোনো দল নেই। তারা রাজনৈতিক তকমা ব্যবহার করে দলকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।”সুধী সমাজসহ স্থানীয়রা প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করছেন, যেন এই ভয়ঙ্কর মাদকচক্রের অবসান ঘটে এবং এলাকায় শান্তি ফিরে আসে।