গোলাম কিবরিয়া (পলাশ) ২০২৪ সালের ৪ঠা আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন রাজধানীর দিয়াবাড়ি মডেল হাইস্কুলের ছাত্র আব্দুল্লাহ আল মাহিন (১৬)। এক বছর পেরিয়ে গেলেও স্বীকৃতি মেলেনি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তার বাবা জামিল হোসেন।তিনি বলেন, “আমার ঘরে এখন আর আলো নেই। সন্তান বিজয়টা দেখে যেতে পারলো না। দেশের জন্য জীবন দিলো, তবু এখনো আন্দোলনের শহীদদের স্বীকৃতি নেই। যে বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন হয়েছিল, সেই বৈষম্যই এখনো রয়ে গেছে।জামিল হোসেন জানান, মাহিন গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পেয়ে প্রথমে উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে যান। পরে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালে নেওয়া হলে রাত সাড়ে ৯টার দিকে মারা যায় মাহিন। বাম চোখ ও মাথার পেছনে দুটি গুলি লেগেছিল তার।তিনি বলেন, “মাহিন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হতে চেয়েছিল। দিয়াবাড়ি মডেল হাইস্কুল থেকে এসএসসি পাস করে ভর্তি হয়েছিল ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজিতে (এনআইইটি)। ও ছিল আমাদের একমাত্র সন্তান। সন্তান হারিয়ে আমরা এখনো স্বাভাবিক হতে পারিনি। কবরের কাছে প্রতিদিন যাই। বিদেশ যাওয়ার ইচ্ছা আর নেই, এখন বাড়ির সামনে একটা মুদি দোকান দিয়েছি।তিনি অভিযোগ করে বলেন, “আমাদের সন্তানরা জীবন দিয়েছিল ন্যায্য অধিকার আর কোটা সংস্কারের জন্য। কিন্তু সরকার আবার ২৪-এর কোটা বহাল রেখেছে। তাহলে কেন আমাদের সন্তানেরা জীবন দিলো? মৃত্যুর এক বছর পেরিয়ে গেলেও স্বীকৃতি পেল না।জামিল হোসেন আরও বলেন, “ময়মনসিংহ জেলা থেকে মোট ৩৯ জন শহীদ হয়েছেন। কিন্তু তাদের মধ্যে মাত্র একজনের নামেই ব্যাপকভাবে কার্যক্রম চালানো হচ্ছে ময়মনসিংহ জেলার সমন্বয়কসহ বিভিন্ন প্রশাসনের কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে। যার জন্য আমাদের ছেলেরা প্রাণ দিয়েছিল সেই বৈষম্যই এখনো রয়ে গেছে।তিনি জানান, মাহিনের মামলার বাদী তিনি নিজেই; গত বছরের ২৮শে আগস্ট উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা করেছেন। শেষে তিনি কষ্টের সুরে বলেন, “আমরা আমাদের সন্তানের জীবনের বিনিময়ে দেশের পরিবর্তন দেখতে চাই। তাদের রক্ত বৃথা যেতে দেওয়া যাবে না।