চয়ন চৌধুরী/সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় সরকারি ঘর দেওয়ার কথা বলে খাইরুন্নাহার নামে এক দরিদ্র মহিলার কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে তা আত্মসাৎ করেছেন বলে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেছে।অভিযুক্ত ওই নেতার নাম এমএমএ রেজা পহেল। তিনি উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়নের চকিয়াচাপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক। এ ছাড়াও তিনি গত ২০২১ সালে অনুষ্টিত ইউনিয়ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দীতা করেছিলেন।সোমবার বিকেলে একই গ্রামের বাসিন্দা তারা মিয়া নামে এক দরিদ্র প্রতিবন্ধী ব্যক্তির স্ত্রী খায়রুন্নাহার বাদী হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে ওই স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার বিরুদ্ধে এ ব্যাপারে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।অভিযোগ থেকে জানা যায়, উপজেলার চকিয়াচাপুর গ্রামের হত-দরিদ্র ও ভুমিহীন তারা মিয়া ও খায়রুন্নাহার দম্পতির ১৪ বছর বয়সের একমাত্র ছেলে নবীর হোসেনকে নিয়ে তারা দীর্ঘদিন যাবত গ্রামের পাশে সরকারি খাস জায়গায় প্লাস্টিকে ত্রিপাল দিয়ে একটি ছাপড়া ঘর নির্মাণ করে সেখানে বসবাস করা আসছেন। প্রতিবন্ধী তারা মিয়া পাশের বাদশাগঞ্জ বাজারে ফুটপাতে বসে গ্যাস লাইট মেরামতের কাজ করে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয় তাকে। এ অবস্থায় নিরুপায় হয়ে তারা তাদের একমাত্র ছেলে নবীর হোসেনকে গত প্রায় ৩ বছর যাবত একই গ্রামের স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা এমএমএ রেজা পহেলের বাড়িতে বছরে ২০ হাজার টাকা মুজুরীতে গরুর রাখাল হিসেবে চাকুরি দেন। নবীর হোসেন ওই নেতার বাড়িতে রাখাল হিসেবে চাকুরিতে যোগদানের পর তার প্রথম বছরের ২০ হাজার টাকা বেতন ঠিকমতো তাকে দেওয়া হলেও রাখাল নবীর হোসেনের পরবর্তী দুই বছরের বেতন বাবত পাওনা ৪০ হাজার টাকা পরিশোধ না করে স্বেচ্ছাসেবকলীগের নেতা এমএমএ রেজা পহেল রাখাল নবীর হোসেনের মাকে বলেন, তোমাদেরতো বসবাস করার মতো কোনো বাড়িঘর নাই, তাই ওই ৪০ হাজার টাকা অফিসে দিয়ে আমি তোমাদের নামে একটি সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত জায়গাসহ একটি ঘর পাওয়ার ব্যবস্থা করে দেব। ৪০ হাজার টাকায় বাড়িসহ ঘর পাবেন। নেতার কাছ থেকে এমন আশ্বাস পেয়ে মহাখুশি রাখাল নবীর হোসেনের দরিদ্র মা খায়রুন্নাহার। এমন আশ্বাস পাওয়ার কয়েক মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত তিনি কোনো সরকারি ঘর না পেয়ে চরমভাবে হতাশ হয়ে পড়েন। গত মাসখানেক যাবত ওই রাখালের অসহায় মা খায়রুন্নাহার স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা এমএমএ রেজা পহেলের নিকট ঘর না দিতে পারলে ছেলের দুই বছরের বেতন বাবত পাওনা ৪০ হাজার টাকা ফেরত চাইতে গেলেই ওই নেতা তার সাথে নানা তাল-বাহানা করতে থাকেন। এমনকি এ বিষয়টি কাউকে জানালে তার খবর আছে বলেও অসহায় খায়রুন্নাহারকে হুমকি দেন এমএমএ রেজা পহেল। এ অবস্থায় নিরুপায় হয়ে ওই রাখালের মা খায়রুন্নাহার অবশেষে এ বিষয়টির বিচার চেয়ে সোমবার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।এ বিষয়ে জানতে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক এমএমএ রেজা পহেলের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোনটি রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) বলেন, এ ধরনের একটি অভিযোগ পেয়েছি। তবে আমরা উভয় পক্ষকেই নোটিশ করে তাদের বক্তব্য নেওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।