চয়ন চৌধুরী/নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলার কুঁচিরগাঁও মৌজাস্থ ৭ একর ফসলি জমি থেকে বর্ষার পানি নিষ্কাশনে নালার মুখ বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।এতে করে ওই গ্রামের ১১ জন কৃষকের প্রায় ৭ একর জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় সেখানে এবার চলতি রূপা আমন মৌসুমে ওই জমিতে আবাদ করা বন্ধ রয়েছে।সম্প্রতি উপজেলার বড়কাশিয়া-বিরামপুর ইউনিয়নের করনশ্রী গ্রামের সবুজ মিয়া (৬০) নামে এক কৃষকের বিরুদ্ধে একই ইউনিয়নের পার্শ্ববর্তী কুঁচিরগাঁও গ্রামের মর্জিনা আক্তার নামে এক বিধবা নারীসহ একই গ্রামের ১১ জন কৃষকের স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে দায়ের করা হয়েছে।
অভিযোগ থেকে জানা গেছে, উপজেলার কুঁচিরগাঁও গ্রামের পাশে ওই গ্রামের ১০-১২ জন কৃষকের প্রায় ৭ একর ফসলি জমি রয়েছে। উক্ত জমি তারা পৌষ-মাঘ মাসে বোরো ও শ্রাবণ-ভাদ্র মাসে রূপা আমন ধান চাষ করে তারা জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন। আর তাদের ওই জমি আবাদ করার আগে জমিতে জমে থাকা বর্ষার পানি নিস্কাশনের জন্য পূর্বকাল থেকেই একটি নালা রয়েছে। করণশ্রী গ্রামের কৃষক সবুজ মিয়ার জমির পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ওই নালার মুখটি এবার তিনি মাটি দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছেন। এতে করে তার জমির পাশে থাকা কুঁচিরগাঁও গ্রামের ১১ জন কৃষকের প্রায় ৭ একর জমির পানি নামতে না পারায় সেখানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ওই জমিতে রূপা আমন আবাদের সময় পেরিয়ে যাওয়ায় কুঁচিরগাঁও গ্রামের কৃষকরা চরম বিপাকে পড়েছেন। অন্যদিকে, তাদের ওই জমিতে রোপন করার জন্য তারা উঁচু এলাকায় তৈরী করা বীজতলাগুলো থেকে যথাসময়ে ধানের চারা তুলতে না পারায় সেগুলোও এখন নষ্ট হওয়ার উপক্রম হচ্ছে। এ অবস্থায় নিরুপায় হয়ে গ্রামের কৃষকরা এ সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে এ লিখিত অভিযোগটি দায়ের করেন।কুঁচিরগাঁও গ্রামের কৃষক দুলাল মিয়া বলেন, বাড়ির পাশের বন্দে আমার ১০ কাটা জমি রয়েছে। বাপ-দাদার আমল থেকেই আমরা ওই জমিতে বোরো ও রূপা আমন ধানের আবাদ করে আসছি। আর তখন থেকেই ওই জমিতে জমে থাকা বর্ষার পানি নামার একটি নালাও রয়েছে। এবার সবুজ মিয়া ওই নালার মুখটি বন্ধ করে দেওয়ায় ওই বন্দে থাকা আমাদের প্রায় ৭০ কাটা জমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এই পানি না নামলে এবার আমাদের জমিতে রূপা আমন আবাদ করা সম্ভব হবে না।তিনি আরো বলেন, ঘাত মতো এবার ওই জমিতে ধানের চারা রোপন করতে না পারায় আমাদের বীজতলায় থাকা ধানের চারাগুলো নষ্ট হওয়ার উপক্রম হচ্ছে। আমার এখন কি করবো কিছুই বুঝে উঠতে পারছিনা।অভিযুক্ত কৃষক সবুজ মিয়া বলেন, ওই বন্দের পানি নিষ্কাশনের রাস্তা আগে ছিল কুদ্দুস মিয়ার জায়গা দিয়ে। কিন্তু আমি বছর দুয়েক আগে তাবলিগে থাকাবস্থায় আমাকে না জানিয়েই মেম্বার বকুল মিয়াসহ অন্যান্য জমির মালিকেরা মিলে আমার জায়গায় পানি নিষ্কাশনের জন্য একটি কালবার্ট নির্মাণ করেন। এতে আমার জমিতে রোপনকৃত ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয় বিধায় আমি ওই নালার মুখটি বন্ধ করে দিয়েছি। তবে আমার জমিতে সদ্য রোপনকৃত ধানের চারাগুলো একটু শক্ত হওয়ার পর দু’এক দিনের মধ্যেই নালার মুখটি খুলে দিব বলেও তিনি জানান।এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জুয়েল আহমেদ এ ধরনের একটি অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমি অভিযোগটি উপজেলা সহকারি কমিশনারের (ভুমি) নিকট পাঠিয়েছি।