পরেশ দেবনাথ(নিজস্ব প্রতিনিধি)কেশবপুরে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা, ধর্মীয় ভাবগাম্বীর্য ও আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে যুগাবতার ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব তিথি শুভ জন্মষ্টমী উদযাপন করা হয়েছে। শুভ জন্মাষ্টমী যা “কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী” নামেও পরিচিত।শনিবার (১৬ আগস্সট-২৫) সকালে কেশবপুর সার্বজনীন জন্মষ্টমী উদযাপন কমিটির উদ্যোগে বনার্ঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা, শ্রী শ্রী গীতা পূজা, গীতা পাঠ, ধর্মীয় সংগীত, চিত্রাংকন, মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জ্বলন ও আলোচনা সভা ও প্রসাদ বিতরণ করা হয়েছে। বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষেরা বাদ্যযন্ত্র সহকারে মিছিল নিয়ে পূজা উদযাপন পরিষদ ও পূজা উদযাপন ফ্রন্টের ধর্মীয় সভাস্থলে হাজির হন। বনার্ঢ্য শোভাযাত্রাটি কেশবপুর সার্বজনীন শ্রীগঞ্জ কালিতলা মন্দির প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন সাজে সজ্জিত কৃষ্ণ ভক্তরা নেচে গেয়ে বাদ্য বাজনা বাজিয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে ওই স্থানে এসে শেষ হয়। তীব্র রোদের উত্তাপ উপেক্ষা করে এসময় রাস্তার দুধারে অসংখ্য মানুষজন তা উপভোগ করে। সনাতন নারীরা উলুধ্বনি দিয়ে মিছিলকে স্বাগত জানায়। শঙ্খ ধ্বনি আর ঢাকঢোলের বাদ্য বাজনা নিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে মিছিলে অংশ নেন ভক্তবৃন্দরা। শিশু, মহিলা, বৃদ্ধ থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের মানুষের সরব অংশগ্রহণ দেখে মনে হয়েছে, যেন কৃষ্ণ প্রেমের এক অদৃশ্য টানে ছুটে চলেছেন তারা শেকড়ের সন্ধানে।পূজা উদযাপন পরিষদের আলোচনা সভা ও মঙ্গল শোভযাত্রার অগ্রভাগে প্রধান অতিথি ছিলেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য ও কেশবপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল হোসেন আজাদ এবং পূজা উদযাপন ফ্রন্টের আলোচনা সভা ও মঙ্গল শোভাযাত্রার অগ্রভাগে থেকে নেতৃত্ব দেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু।সেখানে কেশবপুর সার্বজনীন জন্মষ্টমী উদযাপন কমিটির সভাপতি কৃষ্ণ গোপাল মুখার্জীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সন্মানিত অতিথির বক্তব্য দেন, উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির অধ্যাপক মোক্তার আলী, বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন,উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মাসুদুজ্জামান মাসুদ, পৌর জামায়াতের আমির প্রভাষক জাকির হোসেন, জামায়াত নেতা তাজাম্মুল ইসলাম দিপু, ঢাবিয়ান কেশবপুর শাখার সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান হোসেন, সহকারী অধ্যাপক কানাইলাল ভট্টাচার্য্য, এনসিপির সন্ময়নক সম্রাট হোসেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি মিরাজ বিশ্বাস। স্বাগত বক্তব্য দেন, জন্মষ্টমী উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব মলয় বসু। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন, জন্মষ্টমী উদযাপন কমিটির সমন্বয়ক উৎপল দে ও সদস্য প্রভাষক সাধন দাস।শ্রীকৃষ্ণের শুভ জন্মাষ্টমী উপলক্ষে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে দিনটি উদযাপন করেন। এই দিন ভক্তরা শ্রীকৃষ্ণের সান্নিধ্য লাভের আশায় ধর্মীয় রীতিনীতি মেনে মন্দির ও বাসাবাড়িতে নানান ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদি পালন করেন।সনাতন ধর্মালম্বীদের মতে, ভগবান বিষ্ণুর একটি বিশেষ রূপ হিসেবে মানা হয় শ্রীকৃষ্ণকে। ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে পৃথিবীতে সাকার রূপে আবির্ভূত হন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। তাঁর আবির্ভূত হওয়ার এই দিনটিই শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী নামে পরিচিত।