মোঃ শফিয়ার রহমান /খুলনার পাইকগাছায় পরিবারের মুখে অন্য যোগাতে উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন ইঞ্জিন চালিত ভ্যান হারিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন গরীব ও অসহায় ভ্যান চালক আতিয়ার (৪২)।আতিয়ার উপজেলার কপিলমুনি ইউপির ৭নং ওয়ার্ড সিলেমানপুর গ্রামের দিরাজ সরদারের ছেলে।আতিয়ারের সংসারে স্ত্রী, ১ ছেলে ও ১ মেয়ে নিয়ে আগে থেকেই অসহায়ত্বের বসবাস।ঈদের সময় ১০ কেজি চাল ব্যতীত সে পাইনি কখনও কোন সরকারি অনুদান।পরিবারের মুখে অন্য যোগাতে ছিল তার একটি মাত্র ইঞ্জিন চালিত ভ্যান।যা চালিয়ে অতি কষ্টে পরিবারের মুখে অন্য তুলে দিতো আতিয়ার।আর এভাবেই অসহায়ত্বের মধ্য দিয়েই কেটে যেতো কোনরকমে সংসার।দু’বেলা খেয়ে না খেয়ে দিন কাটলেও সুখেই ছিল আতিয়ার।সম্প্রতি আয়ের একমাত্র সম্বল ভ্যানটি হারিয়ে বর্তমানে স্ত্রী – সন্তানদের নিয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন সে।সরজমিনে দেখা গেছে, বসবাসের জন্য একটি মাত্র বসত ঘড় আতিয়ারের।যে ঘরের উপরের ছাউনী মাটির তৈরি পুরাতন আমলের টালী দিয়ে, ঘড়ের বেড়া মাটির তৈরি গরিবের দেয়াল, ঘড়ের ভিতরের অবস্থা করুণ।বৃষ্টি এলেই পরিবারদের নিয়ে নির্ঘুম রাত কাটাতে হয় তার।কারণ বৃষ্টি হলেই উপরের চাল দিয়ে ঝড়ে অঝোরে বৃষ্টি।আর ঝড় এলে যখন তখন ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যেতে পারে তার বসত ঘড় এমনটাই তার বাড়ির চিত্র।অসহায় ভ্যানচালক আতিয়ার জানান, গত ১৩ জুন (শুক্রবার) প্রতিদিনের ন্যায় আমি সকালে ভ্যান নিয়ে রাস্তায় যাই এবং দুপুর ১২টা পর্যন্ত রাস্তায় ভ্যান চালিয়ে ৩’শ টাকা আয় করি।এমতাবস্থায় জুম্মার নামাজের সময় হলে উপজেলার আগড়ঘাটা বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ সংলগ্ন একটি স্থানে ভ্যানটি তালা দিয়ে নামাজ আদায় করতে মসজিদে ঢুকি।নামাজ আদায় শেষে বাহিরে এসে দেখি আমার ভ্যানটি নির্দিষ্ট স্থানে নেই।এরপর বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও ভ্যানটি পাইনি।আতিয়ার আরও বলেন, বাড়িভিটা ছাড়া আমার আর কোন জায়গা জমি নেই।এই মুহূর্তে যে একটা ভ্যান পুনরায় কিনে চালাবো তার সামর্থ আমার নেই।বর্তমান ভ্যান হারিয়ে পরিবারের লোকজনকে নিয়ে এক বেলা খেয়ে দু বেলা না খেয়ে কোনরকমে দিন কাটাচ্ছি।মাঝে মাঝে মনে হয় নিজেকে শেষ করে দেই।কিন্তু পরিবারের কথা ভেবে সেই কাজটিও করতে পারিনা।আমার মত যেন বিপদ আল্লাহ আর কাউকে না দেয় এই বলেই হাউ মাউ করে কেঁদে ফেলেন আতিয়ার।আতিয়ারের কান্না দেখে স্ত্রী জলি বেগম অঝোরে কাঁদতে কাঁদতে বলেন, দুনীয়ায় এমন কেউ নেই যে আমাদের মতো গরীবের পাশে দাঁড়িয়ে একটা ভ্যানের ব্যবস্থা করে দিবে?আমার স্বামীর আয়ের উপর এ গরিবের সংসার চলে।ভ্যান হারিয়ে আয় বন্ধ হয়ে আজ সংসারে ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের মুখে অন্য তুলে দিতে হয় অতি কষ্টে।এভাবে চলতে থাকলে হয়তোবা আমাদের মরন ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না।সর্বশেষ তিনি সমাজের বিত্তবানদের কাছে একটি ভ্যান পাওয়ার সহযোগিতা কামনা করেন।সংবাদ সংগ্রহকালে উপস্থিত উপজেলা কৃষকদলের প্রচার সম্পাদক এস এম শাহাবুদ্দিন বলেন, আতিয়ার সত্যিই একজন অসহায় মানুষ।তার ভ্যানটি হারিয়ে যাওয়ায় পরিবার পরিজন নিয়ে বর্তমানে খুবই অসহায় ভাবে জিবন-যাপন করছেন।
এ সময় তিনি নিজেও সামান্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন এবং সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।