বিশেষ প্রতিনিধি/যশোরের মনিরামপুরে মাদকবিরোধী অভিযানে নাটকীয়তা! পাওয়া গেল ৭৭ বোতল মদ,৭০ বোতল ফেনসিডিল মামলায় গেল ৫৫ মদ ৩০ ফেনসিডিল ! বাকি গেল কোথায়? জব্দ তালিকা কার স্বার্থে কাটছাঁট? প্রশ্ন উঠছে গোয়েন্দা অভিযানে! তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, মনিরামপুর ও কেশবপুরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযান ঘিরে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার গভীর রাতে খুলনা বিভাগীয় মাদক নিয়ন্ত্রণ গোয়েন্দা টিমের পরিচালিত এই অভিযানে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য উদ্ধার হলেও, আসল সংখ্যাটি গোপন করে ‘ছাঁটাই করা তালিকা’ অনুযায়ী মামলা দায়েরের অভিযোগ উঠেছে যা ঘিরে এলাকায় তীব্র অসন্তোষ ও নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কেশবপুর ও মনিরামপুর উপজেলায় কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী আবু রায়হান (৩২) এর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ৯ বোতল বিদেশি মদ উদ্ধারের দাবি করেন গোয়েন্দারা। তার স্বীকারোক্তিতে অভিযান চালানো হয় সাগর গাজী (২৮) ও রাজু বৈরাগী (২৫) এর বাড়িতে। সেখানে আরও ৪৬ বোতল বিদেশি মদ ও ৩০ বোতল ফেনসিডিলসহ তাদের আটক করা হয়।
তবে সরেজমিনে উপস্থিত স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, ঘটনাস্থল থেকে অন্তত ৭৭ বোতল বিদেশি মদ, ৭০ বোতল ফেনসিডিল, প্রায় ৬ কেজি গাঁজা, ইয়াবা এবং নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়েছিল। এমনকি অভিযানের সময় খুলনা ল-১১-৮৫৩০ নম্বরের একটি সুজুকি জিক্সার মোটরসাইকেল জব্দ করা হয় বলেও তারা জানান। প্রত্যক্ষদর্শীদের বিস্ফোরক অভিযোগ, গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জব্দকৃত মালামালের প্রকৃত হিসাব গোপন করে কৌশলে ছোট আকারের একটি জব্দ তালিকা তৈরি করেন এবং মামলায় সেটাই উল্লেখ করেন। এই অভিযোগে অভিযানের স্বচ্ছতা ও উদ্দেশ্য নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন। এ ঘটনায় মনিরামপুর থানায় পরিদর্শক (গোয়েন্দা) মোঃ রাসেল আলী বাদী হয়ে মামলা করেন (মামলা নং: ১৬), অপরদিকে উপপরিদর্শক (গোয়েন্দা) মোঃ জামাল হোসেন বাদী হয়ে কেশবপুর থানায় পৃথক মামলা দায়ের করেন। তবে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, অভিযানে যুক্ত রাসেল আলীর মোবাইল নম্বরে (০১৭২৯৪৫৩৪৬৭) একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি, তিনি ফোন রিসিভ করেননি।এদিকে থানা সূত্রে জানা যায়, সঞ্জিত কুন্ডু নামের একজনকে পলাতক দেখিয়ে মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, এই অভিযান যেন ‘প্রহসনে’ পরিণত হয়েছে। “মাদকবিরোধী অভিযানকে স্বাগত জানালেও গোপনীয়তা, প্রকৃত তথ্য আড়াল এবং স্বচ্ছতার অভাব প্রশ্নবিদ্ধ করছে পুরো কার্যক্রমকে,” এমনটাই জানিয়েছেন মনিরামপুরের এক প্রবীণ সমাজসেবক। এ বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত দাবি করেছেন সচেতন মহল। সত্য প্রকাশ না হলে এই ধরনের অভিযানে প্রশাসনের ভাবমূর্তি নষ্ট হওয়া ছাড়াও মাদক চক্রের আসল রুট ধরা পড়বে না বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।